মানুষের জানার শেষ নেই। মানুষ অনেক জানে, শুধু জানেনা ভালোবাসা। মানুষ মায়া চিনে কিন্তু জানেনা মায়া কোথায় থাকে, মায়ার সীমাবদ্ব্যতা কতটুকু !
মায়া আর ভালবাসা এক জিনিস নয়! হয়তো বা মায়া আর ভাললাগা এক! মায়ার পিছনে একটা কারন থাকে। সেই মায়ার একটা নির্দিষ্ট মাত্রাও আছে! কিন্তু ভালবাসার পিছনে, কারন থাকেনা। কোন সীমা থাকেনা!
এক বন্ধু ঘাস্ফুল, তার এক মন্তব্যে বলেছিলেন, ” যেখানে গভীর ভালবাসা ….. মায়া’র শুরু সেখানেই। ভালবাসা কখনো “ধ্বংশের উণ্মত্ততা” জাগায় প্রাণে। মায়া তা আগলে রাখে অনেক যতনে। আর তাই ভালবাসা’র পূর্ণতা যে মায়া’তেই ভাই…….। সে যেমনই অবুঝ … অবোধ তেমনি অপ্রতিরোধ্য। শুধুই এক ফল্গুধারা। একটি যদি ঘড়ায় তোলা জল হয় – অপরটি পাগলপরা নদী …. গতিহারা দিশেহারা ……। “
অস্বীকার করছিনা! ভালবাসা থেকেই মায়ার জন্ম! ভালবাসা আর মায়া, একে অপরের পরিপূরক! যে ভালবাসায় মায়া নেই, সে ভালবাসা প্রানহীন দেহের মত! মায়া আছে বলেই ভালবাসা এত মধুর! ভালবাসার শেষ পরিনতি নাকি মায়া? যদি তাই হয়, তবে কেন মানুষের মাঝে এই সম্পর্ক ভাঙার খেলা? আর যদি ভাঙেই, তাহলে কেন ভালবাসা ফুরিয়ে গেলেও, মায়ার আচর গুলো সম্পর্কের দেওয়ালে স্পস্ট দাগ কেটে থাকে?
নাকি একটার শেষ থেকে, আরেকটার শুরু? ভালবাসার শেষ থেকে মায়ার শুরু, নাকি মায়ার শেষ থেকে ভালবাসার!?
ভালবাসা থেকে মায়ার উৎপত্তি। মায়া ক্ষনস্থায়ী। কিছু কস্টের উৎপত্তি মায়া থেকে। মায়া থেকে ভালবাসা জন্ম নাও নিতে পারে। তবে ভালবাসায়, মায়ার জন্ম হবেই। ।
ভালোবাসা মানে হাজার দুঃখের মাঝে একটু খানি সুখের ছোঁয়া। ভালবাসা মানে খন্ড খন্ড সপ্নের সম্মিলিত প্রাসাদ। ভালবাসা মানে হাজারো অভিমানের মাঝে বেচে থাকার স্বাদ! ভালবাসা মানুষ কে বাচতে শিখায়। ভালবাসা একটি বিশ্বাসের নাম। একটি প্রতিস্রুতির নাম। ভালবাসা থেকেই মায়ার জন্ম!!! ভালবাসতে মায়ার প্রয়োজন হয়! মায়ার জন্য ভালবাসা জরুরী নয়!
জীব জগতের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে মায়া! চলার পথে প্রতিটা ধুলো কনার জন্য ও আমাদের মায়ার জন্ম হয়। দীর্ঘদিন একটা খারাপ সংস্পর্শে থাকলেও, সেই খারাপ জিনিস্টার প্রতি মায়া হয়। এমন কি বাড়ীতে পোষা বহুদিন এর পুরানা কুকুরটির জন্য জন্য ও মায়া হয়! তাই বলে ভালবাসা এখানে মুখ্য নয়! রাস্তায় অসহায় ভীখারিনী বা বৃদ্ব্য রিকশা চালক কে দেখেও আমরা দুটো টাকা বেশী দেই। এখানে ভালবাসার দরকার হয়না। চারপাশের অনেক কিছুই আমাদের মনে জায়গা করে নেয় অভ্যাসবশত। এর থেকে বের হওয়া বড় কষ্টের! মায়ার এই এক বিশেষত্ব ! কষ্টের সুচনা করা!
পুরনো বাড়িটি ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট, ছোট্ট বেলার কাচের কাপ টি
ভেঙে যাওয়ার কষ্ট, শৈশবের টা কে ফিরে না পাওয়ার কষ্ট, বহুদিন এক সাথে থেকেও, পুরানো ফার্নিচার ফেলে নতুন ফার্নিচার ঘরে আনার কষ্ট, জীবন সংঙিনী কে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট, পুরনো সংসার ফেলে, নতুন কে বরন করতে গিয়েও, পিছু ফিরে দেখার কষ্ট…… সবই আমাদের মায়া!!!
এমন ও অনেককেই দেখেছি, ১ যুগ ঘর করার পর, সংসার ভেঙে গেছে! যে যার মত আছে বর্তমান কে মেনে নিয়ে! তারপর ও একে অন্যকে কস্টে থাকলে দেখলে, পিছু ফিরে তাকায়! কষ্ট পায় অতীতটা ভেবে! প্রতিদিন সেই ফেলে আসা সংসার, খুটি নাটি ঝগ্রা, কিছু মুহুর্ত, এক সাথে বেড়াতে যাওয়ার কথা ভেবে চোখের জল ফেলে! অথচ ওরা নতুন করে জীবন শুরু করেছে! বেশ ভালই আছে ওদের বর্তমান কে নিয়ে! তারপর ও কেন পিছু ফিরে কষ্ট পাওয়া? এটা মায়া ছাড়া আর কি হতে পারে? ভালবাসা অবশ্যই নয়! ভালবাসা তো সেই কবেই শেষ! তাহলে কি একটার শেষেই, আরেকটার শুরু? নাকি ভালবাসা শেষ হলেও, মায়া আজীবন মানুষের অস্তিত্ব কে দাপিয়ে বেড়ায় ?
ভালবাসা এক, মায়া ভিন্ন জিনিস! ভালবাসলে এক পর্যায়ে মায়া আসবেই, নয়তো ভালবাসা সফল হবার নয়! মধুর হবার নয়! কিন্তু মায়ার জন্য, সবক্ষেত্রে ভালবাসার দরকার হয়না! পুরনো বাড়ী টি ছেড়ে যেতে বা পোষা কুকুরটির মৃত্যুর জন্য আপনি যে কাদছেন, তা মায়া! ভালবাসাও বটে! কিন্তু কোন বৃদ্বা ভিখারীনি কে দুটো টাকা বেশী দেওয়া, শুধুই মায়া! ভালবাসা এখানে নিষ্প্রাণ!
বুঝিনা! আজকাল একটা স্নায়ু যুধ্ব টের পাই নিজের ভিতর! অবাক হইনা ! মানুষের বিস্মিত হবার ক্ষমতা, একটা পর্যায়ের পর, আর কাজ করেনা! আমারো আজকাল করেনা! প্রতিনিয়ত এই স্নায়ুতন্ত্রের যুদ্ধ্বে, হেরে যাচ্ছি!
ডার্ক এভিল
প্রবাহমান জীবন ও কিছু কথা!! পর্ব ৬ !
Published by HB Rita on Monday, May 5th, 2014