Human Rights অর্থাৎ মানবাধীকার কি? আসুন দেখা যাক —
★মানব : হোমো স্যাপিয়েন্সের প্রজাতির একজন সদস্য; একটি পুরুষ, মহিলা বা শিশু; একজন ব্যক্তি।
★অধীকার :এনটাইটেলমেন্টসহ অনুমতি দেওয়া হয় যা, যা আপনার পাওনা ; এবং যেখানে স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়।
★মানবাধীকার : বেঁচে থাকার জন্য কিছু মৌলিক অধিকার কারন আপনি মানুষ।
রাস্ট্র, অর্থনীতি, পরিবার ও সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ডিসেম্বর, ১৯৭৯ সালে জাতিসংঘে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) গৃহীত হয় এবং ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৮১ সালে কার্যকর হয়।
১৯৭২ সনে, নবগঠিত বাংলাদেশ সংবিধানে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় নারীর মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়। সংবিধানে ২৭ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে যে,
“সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারি”!
২৮(২) অনুচ্ছেদ আছে,
“রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন”।
২৮(৩)-এ আছে, “কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ নারী পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে জনসাধারণের কোন বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোন নাগরিককে কোনরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না”।
আমাদের সংবিধান নারীর অধিকারের প্রশ্নে আইনগত সমর্থন নিশ্চিত করলেও, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে, পুরুষালী কর্তৃত্ব, আইনের প্রয়োগগত সীমাবদ্ধতা, নারীর অধিকার সচেতনতার অভাব, এবং বৈষম্যমূলক আইনের উপস্থিতির কারনে, নারীর সমঅধীকার এখনো নির্জীব। এখনো রোজ অসংখ্য নারীর মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে। নারীদের অসহায়ত্ব বেড়েই চলেছে।
এখনো প্রতিদিন নারী ধর্ষিত হচ্ছে। এসিড নিক্ষেপে মুখ ঝলসে চিরতরের জন্য পংগু হয়ে যাচ্ছে। বাসের ভিরে এখনো নারী যৌনবিকৃত পুরুষের ইচ্ছাকৃত স্পর্শ সয়ে যাচ্ছে। অসহায়ত্বের সুযোগে, সাহায্য করার নামে এখনো নারী হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের ভোগের বস্তু। কোন নারী জিন্স পরে বের হলে, কোন নারীর হাতে সিগারেট জ্বলতে দেখলে, এখনো কতিপয় পুরুষ ভাবে, ওই নারী দলিলকৃত পতিতা। তাকে চাইলেই বিছানায় পাওয়া যাবে। মুখ বুঝে বছরের পর বছর স্বামীর অত্যাচার মেনে নিয়ে ঘর করলেই আমাদের সমাজ ও সমাজের ব্যাক্তিবর্গ বলে, ” আহা রে মাইয়াডা কত লক্ষি”! আর যখন সেই নারী স্বামীর অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখে, তখন একি শ্রেনীর লোকগুলোই আবার সেই নারীকে স্বামীর অবাধ্য নস্ট মেয়ে বলে আখ্যায়িত করে।
অনেক পুরুষ কে বলতে শুনি কথা প্রসঙে বলেন, ” আমি আমার বউ কে পুর্ন স্বাধীনতা দেই! ” অবাক হই। স্বাধীনতা যার যার জন্মগত নৈতিক মানবাধিকার। সেটা একজনকে অন্যজন কিভাবে দেয়? স্ত্রী নিশ্চই স্বামীর কাছে অন্য পুরুষের সাথে রাত কাটানোর স্বাধীনতা চাইবে না! ছোট ছোট বায়না, ইচ্ছে, শখ গুলো পুরন করার স্বাধীনতা নিশ্চই স্বামীকে চেয়ে নিতে হবেনা! এটা তার অধিকার! স্ত্রী নয়, মানুষ হিসাবে।
অনেক পুরুষ ভাবেন, শিক্ষীত মেয়ে বিয়ে করে সুখ হয়না। অনেকেই ভাবেন, মেয়েরা বেশী শিক্ষীত হলে স্বামীর অনুগত থাকেনা। তাই দেখা যায় অনেকেই বিয়ের পর, তাদের স্ত্রীর পড়াশোনা বন্দ্ব করে দেন। আসল কথা হচ্ছে, শিক্ষীত স্ত্রীকে, পশুর মত পিটাতে, মৌখিক, ইমোশনালী গালি দিতে, অনেক পুরুষের সাহস হয়না, লজ্জ্বা হয়। তাই তারা স্ত্রীকে নিজের মত করে অপব্যাবহার করতেই, বিকল্প হিসাবে অশিক্ষীত বা কম শিক্ষিত করে রাখতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। ওরা ভুলে যায়, শিক্ষায় জাতীর মেরুদন্ড! ওরা ভুলে যায়, একজন শিক্ষীত মা’ই পারেন, তার ভবিশ্যত প্রজন্মকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে!
অনেক সময়, একজন নারী যখন ২৫ ক্রস করেও, অবিবাহিত থাকেন পারিবারিক দায়ীত্ব মিটাতে কিংবা অর্থের অভাবে, সেই নারীকে অনেক পুরুষ মন্তব্য করেন, ” কুঁড়িতেই বুড়ি” বলে। বার বার বিয়ে এসেও বিয়ে ভেঙে যায়।
কোন অতীমাত্রায় স্বাস্থ্যের অধিকারী বা কালো মেয়ে দেখলে, অনেক পুরুষ কটু মন্তব্য করেন তাদের প্রতি। কারো দৈহিক গঠন নিয়ে, রুপ নিয়ে, বাজে মন্তব্য করে, তাদের আত্বসন্মান খাটো করার অধিকার ওই পুরুষদের কে দিয়েছে??? কোন নারী অল্প বয়সে বিধবা হলে, তার দিকে হাজারো পুরুষের কামার্তু চোখ চেয়ে থাকে। মনে হয় যেন পুরুষ ছাড়া নারী তাদের পৈতৃক সম্পদ! কেন??? সানি লিওন কে নিয়ে ফেসবুকে ফ্যান পেজ করা হয়। অথচ যখন সালমার স্বামী, অর্থের লোভে তাকে বাজারে বিক্রি করে দেয়, সেই একি প্রজন্ম সালমার নাম দেয় বেশ্যা! একটি ধর্ষিতা কে নিয়ে মিডিয়া তোলপার করে, বড় করে ধর্ষক এর ছবি না দিয়ে, ধর্ষিতার ছবি ছাপা হয় নিউজ পেপার এ। সেই ধর্ষিতার প্রতি কারো মনে প্রেম জাগেনা। করুনা হয়! কত অমানবিক আমরা! কত ছগ্মবেশী আমরা! আমাদের বিচার ক্ষমতা কত বর্বর!
মেয়েরা যখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে, পুরুষের কাধে কাধ মিলিয়ে চলতে শিখে, তখন সেই মেয়েটিকে সমাজের অনেকেই বাঁকা চোখে দেখেন। তার চরিত্র সঠিক প্রমান করতে, সীতার মতই তাকে অগ্নি পরিক্ষায় নামতে হয়।
যে নেলসন ম্যান্ডেলা কে চিনেনা, দাসপ্রথা মুক্তির উজ্জ্বল নক্ষত্র সিভিল রাইটস এক্টিভিস্ট মার্টিন লুথার কিং এর ইতিহাস জানেনা, ক্ষুদার্থের পৈশাচিক ছবি তুলে সাড়া জাগানো ফটোজার্নানিস্ট কেভিন কার্টার এর আত্যহত্যার করুন রহস্য যে জানার প্রয়োজনবোধ করেনা, ভ্যাক্লার হাভেল, ম্যারী ওলস্টোনক্রেফট এর মতো মানবধীকার প্রতিষ্টার প্রতিক ও ফেমিনিস্ট এর জীবনি যে পড়ে দেখেনী কখনো, রোজা পার্ক এর মত নিজের অধীকার আদায় করে নেয়ার মনোবল যার মধ্যে নেই, অন্দ্ব ও বধীরদের অধীকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ে যাওয়া হেলেন কিলার এর জন্ম বৃত্তান্ত যে জানেনা, দারিদ্রতা মোচনে ও নারী শিক্ষায় মুসলিম নারীদের সম অধীকার প্রতিষ্ঠায়, পাকিস্তানের মুসলিম নারী আসমা জাহাঙীর ইতিহাস যে জানেনা, তার মাঝে মানবতাবোধ জাগ্রত না হওয়ারই কথা!!!
হ্যা, আমি মানছি, আধুনিক যুগে, কতিপয় নারী স্বইচ্ছায় নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছেন অন্য পুরুষের হাতে! এক্সেপশন কেন্ট বি এ গুড এক্সাম্পল! ওদের দিয়ে, সমগ্র নারী জাতীকে বিচার করলে, সেটা স্টেরিওটাইপিং হবে। কিছু সংখ্যক নারী যেমন বাজে কাজে লিপ্ত হয়ে পতিতার উপাধী নিচ্ছেন, তেমনি, কিছু সংখ্যক পুরুষ ও, সেই নারীদের ভোগ করে, স্বইচ্ছায়, পুরুষ পতিতার উপাধীতে ভুষিত হচ্ছেন! স্বীকার করুন আর নাইবা করুন।
নারী দুর্বল নয়। নারীর নির্ভরশীলতা, তাকে দুর্বল করে রাখে। বিশ্বের প্রতিটি নারী কে বলছি…. আত্বনির্ভর হতে শিখুন। স্বশিক্ষায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুন।একজন নারী হিসাবে, নিজের ইজ্জত আব্রু ঠিক রেখে, সৎ আর অসৎ পথ বেছে, মাথা উঁচু করে চলুন। ইনশাআল্লাহ! পৃথিবীর কোন শক্তি নেই আপনার আত্বসন্মান খাটো করে আপনাকে অপব্যাবহার করে!!!!
আসুন আমরা নারীকে সম্পদ কিংবা দাসী না ভেবে, মানুষ হিসাবে দেখি। তার আত্বমর্যাদা ও সন্মান রক্ষায়, তার মৌলিক অধিকার হতে তাকে বঞ্চিত না করি! মনে রাখবেন, নারী কখনো স্নেহময়ী মা, কখনো প্রেয়সী, কখনো বা কন্যা!!
ডার্ক এভিল
মানবাধীকার!
Human Rights অর্থাৎ মানবাধীকার কি? আসুন দেখা যাক —
★মানব : হোমো স্যাপিয়েন্সের প্রজাতির একজন সদস্য; একটি পুরুষ, মহিলা বা শিশু; একজন ব্যক্তি।
★অধীকার :এনটাইটেলমেন্টসহ অনুমতি দেওয়া হয় যা, যা আপনার পাওনা ; এবং যেখানে স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়।
★মানবাধীকার : বেঁচে থাকার জন্য কিছু মৌলিক অধিকার কারন আপনি মানুষ।
রাস্ট্র, অর্থনীতি, পরিবার ও সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ডিসেম্বর, ১৯৭৯ সালে জাতিসংঘে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) গৃহীত হয় এবং ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৮১ সালে কার্যকর হয়।
১৯৭২ সনে, নবগঠিত বাংলাদেশ সংবিধানে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় নারীর মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়। সংবিধানে ২৭ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে যে,
“সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারি”!
২৮(২) অনুচ্ছেদ আছে,
“রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন”।
২৮(৩)-এ আছে, “কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ নারী পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে জনসাধারণের কোন বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোন নাগরিককে কোনরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না”।
আমাদের সংবিধান নারীর অধিকারের প্রশ্নে আইনগত সমর্থন নিশ্চিত করলেও, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে, পুরুষালী কর্তৃত্ব, আইনের প্রয়োগগত সীমাবদ্ধতা, নারীর অধিকার সচেতনতার অভাব, এবং বৈষম্যমূলক আইনের উপস্থিতির কারনে, নারীর সমঅধীকার এখনো নির্জীব। এখনো রোজ অসংখ্য নারীর মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে। নারীদের অসহায়ত্ব বেড়েই চলেছে।
এখনো প্রতিদিন নারী ধর্ষিত হচ্ছে। এসিড নিক্ষেপে মুখ ঝলসে চিরতরের জন্য পংগু হয়ে যাচ্ছে। বাসের ভিরে এখনো নারী যৌনবিকৃত পুরুষের ইচ্ছাকৃত স্পর্শ সয়ে যাচ্ছে। অসহায়ত্বের সুযোগে, সাহায্য করার নামে এখনো নারী হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের ভোগের বস্তু। কোন নারী জিন্স পরে বের হলে, কোন নারীর হাতে সিগারেট জ্বলতে দেখলে, এখনো কতিপয় পুরুষ ভাবে, ওই নারী দলিলকৃত পতিতা। তাকে চাইলেই বিছানায় পাওয়া যাবে। মুখ বুঝে বছরের পর বছর স্বামীর অত্যাচার মেনে নিয়ে ঘর করলেই আমাদের সমাজ ও সমাজের ব্যাক্তিবর্গ বলে, ” আহা রে মাইয়াডা কত লক্ষি”! আর যখন সেই নারী স্বামীর অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখে, তখন একি শ্রেনীর লোকগুলোই আবার সেই নারীকে স্বামীর অবাধ্য নস্ট মেয়ে বলে আখ্যায়িত করে।
অনেক পুরুষ কে বলতে শুনি কথা প্রসঙে বলেন, ” আমি আমার বউ কে পুর্ন স্বাধীনতা দেই! ” অবাক হই। স্বাধীনতা যার যার জন্মগত নৈতিক মানবাধিকার। সেটা একজনকে অন্যজন কিভাবে দেয়? স্ত্রী নিশ্চই স্বামীর কাছে অন্য পুরুষের সাথে রাত কাটানোর স্বাধীনতা চাইবে না! ছোট ছোট বায়না, ইচ্ছে, শখ গুলো পুরন করার স্বাধীনতা নিশ্চই স্বামীকে চেয়ে নিতে হবেনা! এটা তার অধিকার! স্ত্রী নয়, মানুষ হিসাবে।
অনেক পুরুষ ভাবেন, শিক্ষীত মেয়ে বিয়ে করে সুখ হয়না। অনেকেই ভাবেন, মেয়েরা বেশী শিক্ষীত হলে স্বামীর অনুগত থাকেনা। তাই দেখা যায় অনেকেই বিয়ের পর, তাদের স্ত্রীর পড়াশোনা বন্দ্ব করে দেন। আসল কথা হচ্ছে, শিক্ষীত স্ত্রীকে, পশুর মত পিটাতে, মৌখিক, ইমোশনালী গালি দিতে, অনেক পুরুষের সাহস হয়না, লজ্জ্বা হয়। তাই তারা স্ত্রীকে নিজের মত করে অপব্যাবহার করতেই, বিকল্প হিসাবে অশিক্ষীত বা কম শিক্ষিত করে রাখতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। ওরা ভুলে যায়, শিক্ষায় জাতীর মেরুদন্ড! ওরা ভুলে যায়, একজন শিক্ষীত মা’ই পারেন, তার ভবিশ্যত প্রজন্মকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে!
অনেক সময়, একজন নারী যখন ২৫ ক্রস করেও, অবিবাহিত থাকেন পারিবারিক দায়ীত্ব মিটাতে কিংবা অর্থের অভাবে, সেই নারীকে অনেক পুরুষ মন্তব্য করেন, ” কুঁড়িতেই বুড়ি” বলে। বার বার বিয়ে এসেও বিয়ে ভেঙে যায়।
কোন অতীমাত্রায় স্বাস্থ্যের অধিকারী বা কালো মেয়ে দেখলে, অনেক পুরুষ কটু মন্তব্য করেন তাদের প্রতি। কারো দৈহিক গঠন নিয়ে, রুপ নিয়ে, বাজে মন্তব্য করে, তাদের আত্বসন্মান খাটো করার অধিকার ওই পুরুষদের কে দিয়েছে??? কোন নারী অল্প বয়সে বিধবা হলে, তার দিকে হাজারো পুরুষের কামার্তু চোখ চেয়ে থাকে। মনে হয় যেন পুরুষ ছাড়া নারী তাদের পৈতৃক সম্পদ! কেন??? সানি লিওন কে নিয়ে ফেসবুকে ফ্যান পেজ করা হয়। অথচ যখন সালমার স্বামী, অর্থের লোভে তাকে বাজারে বিক্রি করে দেয়, সেই একি প্রজন্ম সালমার নাম দেয় বেশ্যা! একটি ধর্ষিতা কে নিয়ে মিডিয়া তোলপার করে, বড় করে ধর্ষক এর ছবি না দিয়ে, ধর্ষিতার ছবি ছাপা হয় নিউজ পেপার এ। সেই ধর্ষিতার প্রতি কারো মনে প্রেম জাগেনা। করুনা হয়! কত অমানবিক আমরা! কত ছগ্মবেশী আমরা! আমাদের বিচার ক্ষমতা কত বর্বর!
মেয়েরা যখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে, পুরুষের কাধে কাধ মিলিয়ে চলতে শিখে, তখন সেই মেয়েটিকে সমাজের অনেকেই বাঁকা চোখে দেখেন। তার চরিত্র সঠিক প্রমান করতে, সীতার মতই তাকে অগ্নি পরিক্ষায় নামতে হয়।
যে নেলসন ম্যান্ডেলা কে চিনেনা, দাসপ্রথা মুক্তির উজ্জ্বল নক্ষত্র সিভিল রাইটস এক্টিভিস্ট মার্টিন লুথার কিং এর ইতিহাস জানেনা, ক্ষুদার্থের পৈশাচিক ছবি তুলে সাড়া জাগানো ফটোজার্নানিস্ট কেভিন কার্টার এর আত্যহত্যার করুন রহস্য যে জানার প্রয়োজনবোধ করেনা, ভ্যাক্লার হাভেল, ম্যারী ওলস্টোনক্রেফট এর মতো মানবধীকার প্রতিষ্টার প্রতিক ও ফেমিনিস্ট এর জীবনি যে পড়ে দেখেনী কখনো, রোজা পার্ক এর মত নিজের অধীকার আদায় করে নেয়ার মনোবল যার মধ্যে নেই, অন্দ্ব ও বধীরদের অধীকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ে যাওয়া হেলেন কিলার এর জন্ম বৃত্তান্ত যে জানেনা, দারিদ্রতা মোচনে ও নারী শিক্ষায় মুসলিম নারীদের সম অধীকার প্রতিষ্ঠায়, পাকিস্তানের মুসলিম নারী আসমা জাহাঙীর ইতিহাস যে জানেনা, তার মাঝে মানবতাবোধ জাগ্রত না হওয়ারই কথা!!!
হ্যা, আমি মানছি, আধুনিক যুগে, কতিপয় নারী স্বইচ্ছায় নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছেন অন্য পুরুষের হাতে! এক্সেপশন কেন্ট বি এ গুড এক্সাম্পল! ওদের দিয়ে, সমগ্র নারী জাতীকে বিচার করলে, সেটা স্টেরিওটাইপিং হবে। কিছু সংখ্যক নারী যেমন বাজে কাজে লিপ্ত হয়ে পতিতার উপাধী নিচ্ছেন, তেমনি, কিছু সংখ্যক পুরুষ ও, সেই নারীদের ভোগ করে, স্বইচ্ছায়, পুরুষ পতিতার উপাধীতে ভুষিত হচ্ছেন! স্বীকার করুন আর নাইবা করুন।
নারী দুর্বল নয়। নারীর নির্ভরশীলতা, তাকে দুর্বল করে রাখে। বিশ্বের প্রতিটি নারী কে বলছি…. আত্বনির্ভর হতে শিখুন। স্বশিক্ষায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুন।একজন নারী হিসাবে, নিজের ইজ্জত আব্রু ঠিক রেখে, সৎ আর অসৎ পথ বেছে, মাথা উঁচু করে চলুন। ইনশাআল্লাহ! পৃথিবীর কোন শক্তি নেই আপনার আত্বসন্মান খাটো করে আপনাকে অপব্যাবহার করে!!!!
আসুন আমরা নারীকে সম্পদ কিংবা দাসী না ভেবে, মানুষ হিসাবে দেখি। তার আত্বমর্যাদা ও সন্মান রক্ষায়, তার মৌলিক অধিকার হতে তাকে বঞ্চিত না করি! মনে রাখবেন, নারী কখনো স্নেহময়ী মা, কখনো প্রেয়সী, কখনো বা কন্যা!!
Published by HB Rita on Monday, August 11th, 2014