মৃন্ময় ৯

মৃন্ময়,
তুমি চলে যাবে বললেই,
আমার ভিতর শুরু হয়ে যায় স্বৈরতন্ত্র শাসন ব্যবস্থা।
কবিতার পঙক্তিমালায় অজস্র ভুলে তৈরী হয় সস্তা অখাদ্য
বুকের ভিতর শুনি ভাঙা গড়ার শব্দ।
 
তুমি চোখের আড়াল হলেই,
ঝুপ করে সন্ধ্যা নামে পাশের ঝাউ বনে
মৃত অতীত হামাগুড়ি দিয়ে অগ্রসর হয় ভবিষ্যতে
দেবদারু জারুল শাখায় দেখি কচি ডাল ভেঙে পড়ে
বেড়ে যায় জ্যোৎস্না রাতের ক্ষণস্থায়ীত্বতা।
 
তুমি চলে যাবে বললেই,
থেমে যায় ব্যস্ত নগরীর সকল ব্যস্ততা
তুমি উঠে দাঁড়ালেই,
শুরু হয়ে যায় অসমাপ্ত মহাকালের লুকোচুরি খেলা
বিচ্ছেদে নিষ্প্রাণ প্রাণে ভাসে দুঃখের ভেলা।
 
তুমি ঘর ছেড়ে পা বাড়ালেই,
চারিদিকে প্রকৃতি নিথর হয়ে যায়
অসীম শুন্যতায় বুকের ভিতর খাঁ খাঁ করে
অশ্রুবৃষ্টি হয়ে উঠে পদ্ম পাতার জল।
 
তুমি চলে যাবে বললেই,
দুপুরের রোদ ঢলে পরে গোধূলির কোলে
ভাঙনের শব্দ ভিতর কাঁপিয়ে যায় লোকালয়ে
অসতর্ক চিৎকারে নীল রক্তপাতে,
প্রাণবাতি নিভে আসে মধ্যরাতে।
মাইলের পর মাইল শুন্য দিগন্ত রেখা;
আমার ভয়ার্ত চোখ যায় ছাড়িয়ে।
 
অথচ, কতটা পথই বা যাবে ছেড়ে?
এ ঘর ছেড়ে ও ঘরে, নয়তো
গলির মোড়ে কিংবা স্টেশন রেল লাইনের ধারে?
তবু তুমি চলে যাবে শুনলেই,
ভিতর নদে কষ্টের তরী ভাসে দূর দূরান্তে
যেন এ যাওয়াই শেষ যাওয়া!
ভীষণ শুন্যতায় ঝনঝন শব্দে কাঁচের গুঁড়ো বিঁধে গায়
সেই শব্দে বিহ্বল আমি বধীর, স্থবির
আর কিছুই শুনিনা!
 
মৃন্ময়, তুমি চলে যাবেই বললেই,
এ কেমন হারানোর বেদনায় অস্থিরতা ছেঁয়ে যায় আমায়!