কাদা-মাটি-জল খেয়ে শীতের প্রকোপে বেড়ে উঠে যে চারাগাছ, দিন শেষে তার রাসায়নিক সার নিস্প্রোয়োজন।
গোবরে ভিটে লেপনরত ফুলঝুড়ি সেদিন আক্ষেপ করে বলছিল,
শোন বিনুদি! যার গতরে তিনশো চৌষট্টি দিন ছেঁড়া ময়লা কাপর, তার একদিনে বাহারী কাপড়ে কি মন ভরে?
বলেছিলাম,
এভাবে বলছিস কেন? আহা! ঈদের একটা দিন!
মুখ ঘুরিয়ে ফুলঝুড়ি তারালো আমার দিকে। একটু অস্বস্তিবোধ করলাম। চোখ দুটো খুব শান্ত, স্থির। তবু ঠিক কেমন যেন একটা তীক্ষ্মতা সে চোখের দৃষ্টিতে। ঝট করে চোখ ঘুরিযে নিলাম। ভিতরের ইগো কিছুটা ক্ষতবিক্ষত হল। একটা নিতান্ত গরীব মেয়ের চোখে কি এমন থাকতে পারে যে আমাকে অস্বস্থিতে ফেলে দেয়!
ফুলঝুড়ি হঠাৎ বলে উঠলো,
বড়সাহেবি আদিখ্যাতা দেখে বাঁচিনে গো দি। এ যেন মরণকালে মুখে দুটো এখনো গোআঙ্গুর ঠেসে দিয়েই সাড়া!
ভেবে বিচলিত হলাম, সত্য অনুধাবন করতেও তারা শিখে গেছে! গরীবের মুখে এমন ঠাস ঠাস বাক্য কি শোভা পায়? যে মেয়েটির গায়ে জড়ানো থাকে অর্ধছিন্ন বস্ত্র, তার কি একটি নতুন কাপড়ে ঈদ করা অসামান্য কিছু নয়?
নাকি আমাদের চেতনা ক্ষয়ে ক্ষয়ে পরছে!এই যে সারাবছর ভাত-কাপড়ে কষ্ট করা মানুষগুলোর দৈন্যতার সাথে নিত্য সংগ্রাম করে যাওয়া, তাদের একটি দিন বাঁচার অধীকার দেয়ার নামে তবে কি আমরা তাদের অন্তরাত্মাকে ক্ষতবিক্ষত করছি? নাকি তাদের অসহায়ত্বকে বিদ্রোপ করা কেবল!
এই রুঢ় সত্যকে অনুধাবন করা গরীব মানুষগুলোই আসলে “মানুষ”। আমরা…. এখনো মানুষে রুপান্তরিত হওয়ার বৃথা চেষ্টায় রত।
ফুলঝুড়ি-প্রতিবন্ধি বিবেকের বিরুপ ছায়া
কাদা-মাটি-জল খেয়ে শীতের প্রকোপে বেড়ে উঠে যে চারাগাছ, দিন শেষে তার রাসায়নিক সার নিস্প্রোয়োজন।
গোবরে ভিটে লেপনরত ফুলঝুড়ি সেদিন আক্ষেপ করে বলছিল,
শোন বিনুদি! যার গতরে তিনশো চৌষট্টি দিন ছেঁড়া ময়লা কাপর, তার একদিনে বাহারী কাপড়ে কি মন ভরে?
বলেছিলাম,
এভাবে বলছিস কেন? আহা! ঈদের একটা দিন!
মুখ ঘুরিয়ে ফুলঝুড়ি তারালো আমার দিকে। একটু অস্বস্তিবোধ করলাম। চোখ দুটো খুব শান্ত, স্থির। তবু ঠিক কেমন যেন একটা তীক্ষ্মতা সে চোখের দৃষ্টিতে। ঝট করে চোখ ঘুরিযে নিলাম। ভিতরের ইগো কিছুটা ক্ষতবিক্ষত হল। একটা নিতান্ত গরীব মেয়ের চোখে কি এমন থাকতে পারে যে আমাকে অস্বস্থিতে ফেলে দেয়!
ফুলঝুড়ি হঠাৎ বলে উঠলো,
বড়সাহেবি আদিখ্যাতা দেখে বাঁচিনে গো দি। এ যেন মরণকালে মুখে দুটো এখনো গোআঙ্গুর ঠেসে দিয়েই সাড়া!
ভেবে বিচলিত হলাম, সত্য অনুধাবন করতেও তারা শিখে গেছে! গরীবের মুখে এমন ঠাস ঠাস বাক্য কি শোভা পায়? যে মেয়েটির গায়ে জড়ানো থাকে অর্ধছিন্ন বস্ত্র, তার কি একটি নতুন কাপড়ে ঈদ করা অসামান্য কিছু নয়?
নাকি আমাদের চেতনা ক্ষয়ে ক্ষয়ে পরছে!এই যে সারাবছর ভাত-কাপড়ে কষ্ট করা মানুষগুলোর দৈন্যতার সাথে নিত্য সংগ্রাম করে যাওয়া, তাদের একটি দিন বাঁচার অধীকার দেয়ার নামে তবে কি আমরা তাদের অন্তরাত্মাকে ক্ষতবিক্ষত করছি? নাকি তাদের অসহায়ত্বকে বিদ্রোপ করা কেবল!
এই রুঢ় সত্যকে অনুধাবন করা গরীব মানুষগুলোই আসলে “মানুষ”। আমরা…. এখনো মানুষে রুপান্তরিত হওয়ার বৃথা চেষ্টায় রত।
Published by HB Rita on Saturday, May 26th, 2018