দ্বিচারী মন

কোন ধর্মের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান নয়।মানুষ হিসাবে আমি সার্বজনীন। যদিও ধর্ম, গোত্র, জাতীয়তা, ভৌগলিক ইত্যাদি পরিচয়ের আড়ালে আমাদের বিভক্তি আছে। আছে আমার মনের দ্বিচারিতা।
মানুষ এর মন বড়ই বিচিত্র। ভাবে এক করে আরেক! কাজে আর ভাবনায় আমাদের গড়মিল। মন কে যে বাঁধতে পেরেছে সেই মহান।ক-জন পেরেছে?
মনের নিয়ন্ত্রন যার হাতে নেই, সে তো মনের দাস! মন যা চায়…পাপ, ব্যাভিচার, তাই তার কর্মে প্রতিফলিত হয়। আর এভাবেই সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ পরিনত হয় পশুতে!

আজ এই দ্বিচারিতার কারনেই সমাজ ধ্বংসের মুখে। আমরা বলি এক, করি আরেক। মনের উপর আমাদের যেনো কোন অধীকার নেই, কোন নিয়ন্ত্রন নেই। পলিটিসিয়ানরা ক্ষমতায় আসার আগে জনগনকে অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়, তাদের কষ্টে আবেগ আপ্লত হয়ে পরে। ক্ষমতা হাতে পেলেই তারা স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠে! তাদের ভিতরের পশুটা হুংকার দিয়ে গর্জে উঠে। এখানেই দ্বিচারিতার প্রতিফলন ঘটে!
যেমন সিগ্ম্যান্ট ফ্রয়েড আবিস্কার করেছেন মানব মনের ৩ টি স্তর! ইদ, ইগো, সুপার ইগো! যেখানে বলা যায় “ইদ” হচ্ছে আমাদের মনের কু-বাসনা, লোভ! সামাজিক ভাবে বসবাসের যোগ্য করে নিজের মনকে ধাবিত করাই ফ্রয়েড এর “ইগো”। আর যারা মনের গভিরে ঢুকে আত্মশুদ্ধি করতে পেরেছেন, অন্তরাত্মার অনুসন্ধান করতে পেরেছেন, তারাই সুপার ইগোর অধিকারী।

মনের গতিকে বশে আনতে অন্তরাত্মাকে জাগাতে হবে। যদি অন্তরাত্মা না জাগে তবে মানুষ সত্য ও সুন্দর পথ হতে বিচ্যুত হয়ে পড়বে। সহজ নয়, অন্তরাত্মার সাধন করা বড় কঠিন। প্রতিনিয়ত আমাদের মনের ভিতর নতুন নতুন বাসনার উদয় হয়। বাসনা জাগায় কামনা। আর এখানেই মানুষ বড় অসহায়! মানুষের মনকে নিয়ন্ত্রন করা সহজ নয়। যারা পেরেছেন, তারাই মহা মানব। তারাই শ্রেষ্ঠ!

“আমি সাধুর সঙ্গ যদি পেতাম
সাধুর সঙ্গে চলে যেতাম….
আমি সাধুর রঙে রঙ মিশাইতাম
সে রঙ আমার হোলো কই? ”

আফসোস! আফসোস আমার সাধন বিধান না হওয়ার, আফসোস আমার দ্বিচারী মনের!