গত সোমবার শহীদ মিনারে সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে কয়েকজন ছাত্রীও ছিল। হামলাকারীরা তাদের চড়-থাপ্পড় দেয়ার পাশাপাশি রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটায়।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নেমে জঘন্যভাবে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন যে শিক্ষার্থী,তার নাম মরিয়ম মান্নান ফারাহ।
সে দিনের হামলার নীরব প্রতিবাদে ইডেন কলেজ ছাত্রী খাদিজা ইভ একটি কবিতা লিখেছেন ‘আশীর্বাদ’ শিরোনামে।
তিনি লিখেছেন,
“আমার বাম স্তনে হাত দেয়া ছেলে
দুটো আবার তার বাবা-মার কোলে
ফিরে যাক,
যে সাতজন টেনে হিঁচড়ে নিয়ে
যাচ্ছিলো আমাকে, তারাও ফিরে যাক
তাদের প্রেমিকার কাছে।
আশ্রয় নিক প্রিয়তমার বাহুডোরে —
কিংবা আমারই মতো কোনো এক
নারীর ছায়াতলে।”
________এমন দুঃসাহসী ভাষায় অতীতে কোন নির্যাতীতা প্রতিবাদ করেছেন কিনা আমার জানা নেই। খাদিজা ইভ তার স্তনে হাত রাখার কথা বলতে দ্বিধা করেননি। বর্তমান বিকারগ্রস্থ্য রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সরকারের নোংরা রাজনীতিতে লালীত যারজ সন্তানদের নীরব আশীর্বাদে, শুরু থেকে দিন শেষে তাদের গন্তব্যস্থল স্মরণ করিয়ে দিতে ভয় করেননি তিনি।
“আমি জেনে গেছি, এই বাংলা তাদের।
আমি এ ও জেনে গেছি —
বাংলার বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে কিছু
বিষাক্ত কুলাঙ্গারের নিঃশ্বাস,
পরিত্রাণ নেই কোথাও।”
________একজন নারী তার সম্ভ্রম রক্ষা করতে না পারার নিদারুন অভিমানে জয়বাংলাকে সঁপে দিয়েছেন “তাদের” হাতে। এই “তারা” কারা? এই “তারা” সেই লম্পট ঘৃনিত ছাত্রলীগ নেতারা যারা দিনের আলোতে অধীকারের দাবী আদায়ে আন্দোলনরত একজন নারীর স্তন টিপে তাদের নেতিয়ে পড়া পুরুষত্বকে পরখ করে দেখে “ঠিক আছে তো?” ছিঃ কি লজ্জ্বা কি লজ্জ্বা!
“আমার স্তনে যে সাত সুপুরুষের চিহ্ন
লেগে আছে তারা সংসারী হও।
তাদের কোলে জন্ম নিক ফুটফুটে
দুটো মেয়ে —
দিব্যি দিয়ে বলছি, এ আমার আশীর্বাদ।”
_______এই আশীর্বাদ তাদের জন্য আশীর্বাদ নয়। এই আশীর্বাদে খাদিজা ইভ স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, তোরা কারো স্বামী হো, কারো পিতা হো, তোদের ঘরে কোন একদিন জন্ম নিক আমার মত দুটো নারী সন্তান! সেই সন্তানেরা বড় হবে। একদিন গুগলে সংরক্ষিত ড্যাটার সুবাদে তাদের নজরে পরবে আজকের এই লিখা, তারা দেখবে তাদের পিতা কেমন করে একজন নারীকে দলে মুচরে, টেনে হিছরে মজা করছে! সেইদিন তোদের সন্তানেরা, যারা পরিপূর্ণ নারী, তোদের মুখে থু থু ফেলবে। তোদের নারী সন্তানেরা তোদের পিতা পরিচয় দিতে ঘৃনায় মরে যাবে! আর এটাই হবে আমার প্রশান্তি!
মরিয়ম মান্নান ফারাহর লান্চিত হওয়ার অমানবিক ছবিটি নিয়ে খাদিজা ইভ মুখ খুলেছেন। তিনি লিখেছেন, প্রতিবাদ করেছেন।কত শত জন ভয়ে লজ্জ্বায় প্রতিবাদ করার সাহস রাখেনা। এ লজ্জ্বা কার? এ ব্যর্থতা কার?
যে কোন পদ্ধতির সংস্কার বা আন্দোলন, যে কোন দেশের যে কোন নাগরিকের বৈধ অধীকার। কোটা সংস্কার আন্দোলন একাংশ জনগনের ন্যায্য অধীকার আদায়ের আন্দোলন। সেই অধীকার চাইতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, তার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত হওয়া, আন্দোলনকারীদের খুঁজে না পাওয়া, ক্যাম্পাস থেকে আন্দোলনকারীদের তুলে নিয়ে যাওয়া, নারী আন্দোলনকারীর স্তন মুচরে দলীয় ক্ষমতার বলে শহর দাপিয়ে বেড়ানো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার কারো পোষ্টে লাইক দেয়ায় ভয়, মত প্রকাশে বাঁধা, সব জায়গায় সরকারের হস্তক্ষেপ…..ফ্যাসিবাদী সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতা প্রমান করে। বেনিটো অ্যামিলকেয়ার আন্দ্রে মুসোলিনি যে ফ্যাসিবাদের জন্ম দিয়ে ১৮ বছর ইটালীকে হাতের মুঠোয় করে রেখেছিলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার যদি একই উদ্দেশ্য নিয়ে এগোয়, তবে আর বেশী সময় নেই।
বড় বড় ঝড়গুলো আসার পূর্বে শীতল বাতাস প্রকৃতিকে জানান দিয়ে যায় যে আমি আসছি! খাদিজা ইভর প্রতিবাদের ভাষাও ছিল নীরব-শীতল। তার একটি কবিতা, কিছু লাইন বিশ্বমানবতার বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করে!
“আশীর্বাদ” কবিতাটি কেবল একজন নির্যাতীতার নীরব অশ্রুপাত নয়, এই কবিতা একটি প্রলয়ংকরী জড়ের পূর্বাবাস।
পরিশেষে খাদিজা ইভর উদ্দেশ্যে দুটি লাইন উদ্ধৃতি করবো-
সাব্বাস মেয়ে সাব্বাস
তুমি সাহসী বঙ্গনারী আজকের প্রতিবাদ
উগরে দাও যত পারো
অভিশাপ হোক অন্তরালের আশীর্বাদ।
অশ্রুপাতে অস্ফুট শিন্জন
জাগিয়ে তুলুক বঙ্গনারীর স্বাধীকার
সয়ে যাওয়া বেদনায়
অভিমান তোমার একচ্ছত্র অধীকার।
আমার বাম স্তনে হাত দেয়া ছেলে দুটো আবার তার বাবা-মার কোলে ফিরে যাক
গত সোমবার শহীদ মিনারে সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথার সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে কয়েকজন ছাত্রীও ছিল। হামলাকারীরা তাদের চড়-থাপ্পড় দেয়ার পাশাপাশি রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটায়।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নেমে জঘন্যভাবে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন যে শিক্ষার্থী,তার নাম মরিয়ম মান্নান ফারাহ।
সে দিনের হামলার নীরব প্রতিবাদে ইডেন কলেজ ছাত্রী খাদিজা ইভ একটি কবিতা লিখেছেন ‘আশীর্বাদ’ শিরোনামে।
তিনি লিখেছেন,
“আমার বাম স্তনে হাত দেয়া ছেলে
দুটো আবার তার বাবা-মার কোলে
ফিরে যাক,
যে সাতজন টেনে হিঁচড়ে নিয়ে
যাচ্ছিলো আমাকে, তারাও ফিরে যাক
তাদের প্রেমিকার কাছে।
আশ্রয় নিক প্রিয়তমার বাহুডোরে —
কিংবা আমারই মতো কোনো এক
নারীর ছায়াতলে।”
________এমন দুঃসাহসী ভাষায় অতীতে কোন নির্যাতীতা প্রতিবাদ করেছেন কিনা আমার জানা নেই। খাদিজা ইভ তার স্তনে হাত রাখার কথা বলতে দ্বিধা করেননি। বর্তমান বিকারগ্রস্থ্য রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সরকারের নোংরা রাজনীতিতে লালীত যারজ সন্তানদের নীরব আশীর্বাদে, শুরু থেকে দিন শেষে তাদের গন্তব্যস্থল স্মরণ করিয়ে দিতে ভয় করেননি তিনি।
“আমি জেনে গেছি, এই বাংলা তাদের।
আমি এ ও জেনে গেছি —
বাংলার বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে কিছু
বিষাক্ত কুলাঙ্গারের নিঃশ্বাস,
পরিত্রাণ নেই কোথাও।”
________একজন নারী তার সম্ভ্রম রক্ষা করতে না পারার নিদারুন অভিমানে জয়বাংলাকে সঁপে দিয়েছেন “তাদের” হাতে। এই “তারা” কারা? এই “তারা” সেই লম্পট ঘৃনিত ছাত্রলীগ নেতারা যারা দিনের আলোতে অধীকারের দাবী আদায়ে আন্দোলনরত একজন নারীর স্তন টিপে তাদের নেতিয়ে পড়া পুরুষত্বকে পরখ করে দেখে “ঠিক আছে তো?” ছিঃ কি লজ্জ্বা কি লজ্জ্বা!
“আমার স্তনে যে সাত সুপুরুষের চিহ্ন
লেগে আছে তারা সংসারী হও।
তাদের কোলে জন্ম নিক ফুটফুটে
দুটো মেয়ে —
দিব্যি দিয়ে বলছি, এ আমার আশীর্বাদ।”
_______এই আশীর্বাদ তাদের জন্য আশীর্বাদ নয়। এই আশীর্বাদে খাদিজা ইভ স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, তোরা কারো স্বামী হো, কারো পিতা হো, তোদের ঘরে কোন একদিন জন্ম নিক আমার মত দুটো নারী সন্তান! সেই সন্তানেরা বড় হবে। একদিন গুগলে সংরক্ষিত ড্যাটার সুবাদে তাদের নজরে পরবে আজকের এই লিখা, তারা দেখবে তাদের পিতা কেমন করে একজন নারীকে দলে মুচরে, টেনে হিছরে মজা করছে! সেইদিন তোদের সন্তানেরা, যারা পরিপূর্ণ নারী, তোদের মুখে থু থু ফেলবে। তোদের নারী সন্তানেরা তোদের পিতা পরিচয় দিতে ঘৃনায় মরে যাবে! আর এটাই হবে আমার প্রশান্তি!
মরিয়ম মান্নান ফারাহর লান্চিত হওয়ার অমানবিক ছবিটি নিয়ে খাদিজা ইভ মুখ খুলেছেন। তিনি লিখেছেন, প্রতিবাদ করেছেন।কত শত জন ভয়ে লজ্জ্বায় প্রতিবাদ করার সাহস রাখেনা। এ লজ্জ্বা কার? এ ব্যর্থতা কার?
যে কোন পদ্ধতির সংস্কার বা আন্দোলন, যে কোন দেশের যে কোন নাগরিকের বৈধ অধীকার। কোটা সংস্কার আন্দোলন একাংশ জনগনের ন্যায্য অধীকার আদায়ের আন্দোলন। সেই অধীকার চাইতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, তার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত হওয়া, আন্দোলনকারীদের খুঁজে না পাওয়া, ক্যাম্পাস থেকে আন্দোলনকারীদের তুলে নিয়ে যাওয়া, নারী আন্দোলনকারীর স্তন মুচরে দলীয় ক্ষমতার বলে শহর দাপিয়ে বেড়ানো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার কারো পোষ্টে লাইক দেয়ায় ভয়, মত প্রকাশে বাঁধা, সব জায়গায় সরকারের হস্তক্ষেপ…..ফ্যাসিবাদী সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতা প্রমান করে। বেনিটো অ্যামিলকেয়ার আন্দ্রে মুসোলিনি যে ফ্যাসিবাদের জন্ম দিয়ে ১৮ বছর ইটালীকে হাতের মুঠোয় করে রেখেছিলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার যদি একই উদ্দেশ্য নিয়ে এগোয়, তবে আর বেশী সময় নেই।
বড় বড় ঝড়গুলো আসার পূর্বে শীতল বাতাস প্রকৃতিকে জানান দিয়ে যায় যে আমি আসছি! খাদিজা ইভর প্রতিবাদের ভাষাও ছিল নীরব-শীতল। তার একটি কবিতা, কিছু লাইন বিশ্বমানবতার বিবেককে প্রশ্নবিদ্ধ করে!
“আশীর্বাদ” কবিতাটি কেবল একজন নির্যাতীতার নীরব অশ্রুপাত নয়, এই কবিতা একটি প্রলয়ংকরী জড়ের পূর্বাবাস।
পরিশেষে খাদিজা ইভর উদ্দেশ্যে দুটি লাইন উদ্ধৃতি করবো-
সাব্বাস মেয়ে সাব্বাস
তুমি সাহসী বঙ্গনারী আজকের প্রতিবাদ
উগরে দাও যত পারো
অভিশাপ হোক অন্তরালের আশীর্বাদ।
অশ্রুপাতে অস্ফুট শিন্জন
জাগিয়ে তুলুক বঙ্গনারীর স্বাধীকার
সয়ে যাওয়া বেদনায়
অভিমান তোমার একচ্ছত্র অধীকার।
Published by HB Rita on Wednesday, July 4th, 2018